বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আরো এক দফা রেপো সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে এই সুদহার ১০ শতাংশে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার দেশের সব ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে রেপো হার বাড়ানোর কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়েছে, নতুন এই হার আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।

রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো এক দিনের জন্য টাকা ধার নেয়। একে বলা হয় ব্যাংকিং খাতের নীতি উপাদান (পলিসি টুলস)। এর সুদ হারকে বলা হয় নীতি সুদ হার (পলিসি রেট)। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে।

রেপোর সুদ বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর তহবিল পাওয়ার খরচ আরো বাড়বে। তাতে ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীদের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুদহার বেড়ে যাবে।

সরকারের পালাবদলে আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বার নীতি সুদহার বাড়ানো হল।

এর আগে চলতি বছর ২৫ মেপ্টেম্বর ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপো হার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছিল। তার এক মাস আগেও বাড়ানো হয়েছিল ৫০ বেসিস পয়েন্ট।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করা পর্যন্ত সংকচোনশীল মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখতে রেপো রেট বাড়ানো হবে।

এছাড়া নীতি সুদহারের করিডোরের ঊর্ধসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ, আগে বলা হত রিভার্স রেপো) ক্ষেত্রে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে এবং নীতি সুদহারের করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির (এসডিএফ) শতকরা ৮ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজারে তারল্যপ্রবাহ কমিয়ে রাখার নীতি নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে থেকে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির হার আন্দোলন, সংঘাত, কারফিউ আর অচলাবস্থার মধ্যে জুলাইয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায়। সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমলেও খাদ্য খাতে এই হার এখনও ১২ শতাংশের উপরে রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি মাসে যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেথা যাচ্ছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ; যা গতবছর সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ ছিল।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর একবার সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতি কমার বিষয়ে আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, “মূল্যস্ফীতি মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে একটি ভালো জায়গায় চলে আসবে। কতখানি ভালো জায়গায় আসবে সেটা হয়ত বলা যাবে না। তবে আমরা পলিসি টাইট করব, যাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আমাদের এখন বিনিময় হার স্থিতিশীল আছে। এছাড়া রেমিটেন্সও বাড়ছে। আশা করি আগামীতেও বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকবে। যদি এটা ধরে রাখা যায় তাহলে মূল্যস্ফীতি অবশ্যেই কমে আসবে।”